উমোজা গ্রাম ও নারী জাগরণ

উমোজা গ্রাম ও নারী জাগরণ

উমোজা গ্রাম ও নারী জাগরণ

ছোটকাল থেকেই আমাদের আশেপাশে আমরা সবখানে পুরুষতান্ত্রিকতার ছোঁয়া প্রত্যক্ষ করে আসছি।বর্তমান বাংলাদেশ আধুনিকতার ছোঁয়ায় সজ্জিত হলেও এখনো পুরুষ কর্তৃক নারীদের শাসিত কিংবা শোষিত হওয়ার বিষয়টি এখনো যায় নি।প্রায় বলতে গেলে, উপমহাদেশীয় রাজ্যগুলোতে এটা একটা স্বাভাবিক প্রথা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। 

অবাক করার বিষয় হলো,এইরকম পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মধ্যেও পূর্ব আফ্রিকার ছোট্ট দেশ কেনিয়ার ছোট্ট একটি গ্রাম মিলে শুধুই নারীদের রাজত্ব।বলা হয়ে থাকে,এই গ্রাম নারীদের স্বর্গ।ছোট্ট এই গ্রামটির নাম উমোজা।যার অর্থ ঐক্য।

১৯৯০ সালে রেবেকা লোলোসলি নামক এক নিপীড়িত,অত্যাচারিত নারীর হাত ধরেই এই উমোজা গ্রামের সূচনা।তখনকার সময়ে পুরুষদের অবাধ নারী নির্যাতন,ধর্ষণ এসব যেন কোনো ব্যাপারই ছিল না।তাছাড়া বাল্যবিবাহ তো আছেই।মূলত মেয়েদের কাজ ছিল,প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হওয়া,সন্তান উৎপাদন করা এগুলোই।কিন্তু রেবেকা এসব আর সহ্য করতে চাইনি।সে তার মতো নিপীড়িত মেয়েদের একজোট করে সম্পূর্ণ নারী নিয়ন্ত্রিত একটি গ্রামের সূচনা ঘটায়।যেখানে পুরুষ প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

উমোজার ভিন্ন জীবন ব্যবস্থা, নারীর সংগ্রামের গল্প আর অসাধারণ বৈচিত্র্যে ভরা জীবনধারা সত্যিই অবাক করার মতো।তাদের এই প্রচেষ্টা দেখে আশেপাশের অনেক পুরুষশাসিত অঞ্চল চেয়েছিল তার প্রতিরোধ করতে।কিন্তু উমোজা গ্রামের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এখনো কোনো পুরুষ বাধা হয়ে আসতে পারেনি।তারা নিজেদের সম্মিলিত চেষ্টায় স্কুল, হাসপাতাল সব নির্মাণ করেছে।স্কুল গুলোতে তারা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নারীদের প্রতি সম্মান এবং অহিংস হওয়ার শিক্ষা প্রদান করে।


তারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো জীবনযাপন করে।নিজেদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে ঐতিহ্যবাহী গয়না আর কাপড়কে পুঁজি করে নিজেদের জন্য পৃথিবী গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছে এখনো।যেন প্রতিটি গয়না এবং কাপড়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে উমোজা গ্রামের নারীদের প্রতিদিনের বেঁচে থাকার সংগ্রামের গল্পগুলো।

বর্তমান এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে উমোজা গ্রাম যেন নারীদের জন্য অণুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।


উমোজা গ্রাম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র -লিংক