জ্ঞান কি

জ্ঞান কি

জ্ঞান কি

সমাজবদ্ধ মানুষের সামাজিক শ্রম ও চিন্তার মধ্যে দিয়ে জ্ঞানের উদ্ভব। পরিবর্তমান বস্তুজগৎ সম্পর্কে মানুষের ভাবগত ধারণা এবং তার ভাষা গত প্রকাশই হল জ্ঞান।

জ্ঞান সামাজিক ব্যাপার৷ সমাজের মধ্যে ব্যক্তির ক্রিয়াকান্ডের বিশ্লেষণ ব্যাতিরেকে জ্ঞান সমস্যার সঠিক উপলব্ধি সম্ভব নয়।

কিন্তু জ্ঞানের এই তত্ত্ব পূর্বে তেমন স্বীকৃত হত না।বিশেষ করে প্রাচীন ও মধ্যযুগে বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যাক্তির অন্তর্দৃষ্টি আহৃত সমাধান বা তত্ত্বকে  জ্ঞান বলা হত।এরূপ ধারণা করা হতো,বাস্তব জগৎ থেকে যে ব্যক্তি যত বিচ্ছিন্নভাবে সমস্যা নিয়ে আত্মনিবিষ্ট হতে পারে সেই তত জ্ঞানী। সমাজ ও বস্তুজগতের উর্ধ্বে কোথাও 'জ্ঞান'-রূপ একটা অস্তিত্ব আছে। ব্যাক্তি কেবল বিশ্লিষ্ট চিন্তা বা ধ্যানের মাধ্যমেই সেই জ্ঞানের সাক্ষাৎ  লাভ করতে পারে। জ্ঞানের সর্বজনীন সূত্রগুলি মানুষের জন্য বিধাতার দান বলে মনে করা হতো।

কিন্তু দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদের একটি অবদান এই যে দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ জ্ঞানকে পরিবেশের  সঙ্গে সমাজবদ্ধ ব্যক্তির ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়ার সম্পর্কে এবং তার মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের  শক্তিবৃদ্ধি, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণী চিন্তার বিকাশ ইত্যাদি মিলিয়ে একটি সামগ্রিক বিকাশমান প্রক্রিয়া হিসেবে উপস্থিত করার চেষ্টা করেছে।এই তত্ত্ব অনু্যায়ী জ্ঞানের যে সর্বজনীন সূত্রগুলিকে আমরা ঈশ্বর দত্ত বলে অনুমান করেছি যে সূত্রগুলিও মানুষের দীর্ঘকালীন অভিজ্ঞতার ফল। এ কারণে মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে বিকাশলাভ করার গোড়া থেকেই মানুষ জ্ঞানী হতে পারে নি।বাস্তব জগতের ঘাত -প্রতিঘাতে বিকাশের একটা পর্যায়ে মানুষ জ্ঞান অর্জন করতে শুরু করেছে। জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা মানুষের ঐতিহাসিক বিকাশের একটি বিশেষ পর্যায়ের সূচক।

তথ্যসূত্রঃ দর্শনকোষ